বাংলাদেশের সেরা ১০ চলচ্চিত্র / বাংলা মুভি

সেরা ১০ টি বাংলা সিনেমা কোনগুলো তা এখনো অনেকেরই অজানা। জানলে অবাক হবেন এক সময় বাংলা মুভি দেখার জন্য মানুষ পাগল হয়ে যেত সিনেমা হলে। তবে আপনি জানলে অবাক হবেন কয়েক দশক আগে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা বর্তমান সময়ে বক্স অফিস প্রাপ্ত সিনেমা পরান কিংবা হাওয়া সিনেমার থেকেও বেশি ইনকাম করেছে। কি সেই সিনেমা তা জানতে পারবেন আজকের পোস্ট সম্পূর্ণ পড়ার মাধ্যমে। তালিকায় যেসব সিনেমাগুলো থাকবে তা মূলত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্বের সিনেমা। এবং ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্বে সিনেমা হলেও এখন পর্যন্ত একটা ইতিহাস গড়ে তুলেছে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক আজকে আমাদের এই সিনেমার তালিকা গুলো।

সেরা ১০ টি বাংলা সিনেমার তালিকা

  • ছুটির ঘন্টা
  • জীবন থেকে নেয়া
  • নবাব সিরাজউদ্দৌলা
  • সাত ভাই চম্পা
  • তিতাস একটি নদির নাম
  • সীমানা পেরিয়ে
  • বেদের মেয়ে জোসনা
  • চিত্রা নদীর পাড়ে
  • ধীরে বহে মেঘনা
  • রূপালি সৈকতে

ছুটির ঘন্টা (বাংলা মুভি)

আজিজুর রহমান নামক একজন বিখ্যাত পরিচালক এর দ্বারা নির্মিত এ বাংলা মুভি আজকে বিশ্বের তালিকায় সর্বপ্রথম অবস্থিত। বিশ্বে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় সিনেমা হিসেবে পরিচিত ছুটির ঘন্টা। একটি ছাত্র কিভাবে বাথরুমে সকলের অজান্তে বন্ধ হয়ে পরে তা নিয়ে সিনেমা নির্মিত। আর কিভাবে কষ্ট করে সে সেখান থেকে বের হতে পেরেছিল তাও দেখানো হয়েছে।

চিত্রে ফুটে উঠেছে সেই ছাত্রের কষ্ট করে টয়লেট হতে মুক্তির ঘটনা। এরই সাথে অত্যন্ত বিচক্ষণ বুদ্ধির পরিচয় ফুটিয়ে তুলেছেন আজিজুর রহমান। তার তৈরি এই সিনেমা এখন পর্যন্ত মানুষ দেখার জন্য পাগল। এছাড়াও আগেকার মানুষজনের কাছে শুনলে জানতে পারবেন তখনকার সময় এই সিনেমা কতটা বিখ্যাত ছিলো। প্রতিটি সিনেমা হলে যেন এই সিনেমা দেখার জন্য সবাই মশগুল হয়ে উঠতো। ১৯৮০ সালে বাংলাদেশে এই সিনেমাটি মুক্তি প্রাপ্ত হয়েছিল শিশুদের জন্য। শিশুদের জন্য সিনেমাটি মুক্তিপ্রাপ্ত হলেও বাংলায় মানুষ দেখতে খুব আগ্রহ প্রকাশ করে।

আগ্রহ প্রকাশ করার পরবর্তীতে মানুষজন সিনেমাটি দেখতে আসে সিনেমা হলে। এরই পরে সিনেমাটি দেখে কেউ কেউ অনেক বেশি কেঁদেছিল। কেননা সিনেমাটি প্রায় ইমোশনাল টাইপের ছিল বলা যেতে পারে। মানুষ কিভাবে একটি দরুন যন্ত্রণার মধ্যে পড়লে বেরোতে পারে তা নিয়েই এই সিনেমাটি ফুটে উঠেছে।

জীবন থেকে নেয়া

জহির রায়হান যিনি বাংলাদেশের সবচাইতে অন্যতম একজন পরিচালক। নির্মমভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের পরে। যার সিনেমার জন্য মুক্তিযুদ্ধে মানুষজন হয়ে গেছিল অনুপ্রাণিত। তিনি হচ্ছেন জহির রায়হান নামক অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন সিনেমা পরিচালক। সে সময় এই সিনেমার মাঝে যেই গানটি তিনি প্রকাশ করেছিলেন সেটি আজকের আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। অর্থাৎ জাতীয় সংগীতে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের।

বাংলাদেশে ১৯৭০ সালের এপ্রিল মাসে এটি মুক্তি পেয়েছিল। সে সময় বাঙালি জাতির ত্যাগ এবং বাংলাদেশ জাতীয় দুঃখ কষ্টের চিত্র ফুটে উঠেছিল সিনেমার মাধ্যমে। বলতে পারেন বাংলার ইতিহাসে অন্যতম একটি সিনেমা জীবন থেকে নেয়া

হাওয়া মুভি ডাউনলোড লিংক / Hawa Movie Download Link

নবাব সিরাজউদ্দৌলা

খান আতাউর রহমান বাংলার অন্যতম এবং শ্রেষ্ঠ সিনেমা নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে নিয়ে একটি সিনেমা তৈরি করেন। ১৯৭০ সালে ভারত বাংলা সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছিল। এবং এই সিনেমাটি মুক্তিপ্রাপ্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সিরাজউদ্দৌলার নামে অনেক জনপ্রিয়তা পেয়ে গিয়েছিল।

এই সময় সিনেমাটির মধ্যে মূলত মীরজাফর এবং ঘষেটি বেগুনের লোভ প্রকাশ পেয়েছিল। এই সিনেমার মাধ্যমে বাংলার মানুষ জানতে পেরেছে ২০০ বছরের কষ্টের ফলে কিভাবে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল। এর সঙ্গে কিভাবে মানুষজনের উপর নির্যাতন করেছিল ব্রিটিশরা। এছাড়া ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কিভাবে শোষণ করেছে তার সম্পর্কে একটি অসাধারণ দুর্দান্ত সিনেমা এটি।

সাত ভাই চম্পা

দিলীপ সম সে সময় যে সিনেমা তৈরি করেছিল তা এখন বিশ্ব বিখ্যাত। খাতিনামা অর্জন করে এই সিনেমার নাম সাত ভাই চম্পা। ১৯৪৮ সালের সিনেমাটি পাবলিশ করা হয়েছিল। মুক্তিপ্রাপ্ত আর পরপরই সিনেমাটি থেকে প্রচুর পরিমাণ উপার্জন করতে সক্ষম হয়। তারই সঙ্গে সিনেমাটির মূলত সে সময়কার অনেক বড় একটি সিনেমায় পরিণত হয়।

এটি বাংলায় অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি গল্প হিসেবে পরিচিত হলেও প্রথম সিনেমায় রূপান্তর করে একজন। ১৯০৭ সালে মূলত সাত ভাই চম্পা নিয়ে একটি গল্প সর্বপ্রথম রচিত হয়েছিল। মিত্র মজুমদার ঠাকুরের ঝুলি নামক গল্পের বইয়ে এই গল্পটি স্থান পেয়েছিল। তারপর থেকেই সাত ভাই চম্পাকে নিয়ে জনপ্রিয়তার সৃষ্টি হয়।

তখনই সিনেমা সৃষ্টির উপলব্ধি করে বেশ কয়েকজন পরিচালক। তারই মাঝে একজন সিনেমাটি তৈরির মাধ্যমে প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করে ফেলেছিল। এছাড়া সাত ভাই চম্পা নিয়ে বাংলাদেশ এবং ভারতের বেশ কয়েকটি নাটক রয়েছে। এরাই মাঝে অত্যন্ত জনপ্রিয় জি বাংলা নাটক তৈরি করেছিল এটি নিয়ে। আর বাংলার মা বোনেরা নাটকটি দেখে বেশ আনন্দিত হয়েছিল।

তিতাস একটি নদির নাম

ঋত্বিক ঘটক নামক একজন অসাধারণ পরিচালকের পরিচালনায় তৈরি হয়েছে তিতাস একটি নদীর নাম নামক সিনেমাটি। ১৯৭৩ সালের সিনেমাটি মূলত তৈরি হয়েছিল। এই সিনেমাটি একটি উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। এই সিনেমাটি মূলত ব্রিটিশ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অসাধারণ উন্নয়ন ঘটিয়েছিল। সমালোচনাও হয়েছিল তার ঐ পাশাপাশি হয়েছিল সুনাম। বিশেষ সুনাম করিয়া আমাদের তালিকায় অত্যন্ত জনপ্রিয় অনুষ্ঠান গ্রহণ করেছে এই সিনেমাটি।

সীমানা পেরিয়ে

১৯৭৭ সালে আলমগীর কবিরের আরো একটি নতুন সিনেমা হচ্ছে সীমানা পেরিয়ে। দুজন তরুণ তরুণী আসলে একটা জায়গা থেকে হারিয়ে একটি জায়গায় একত্রিত হয়। এবং তাদের নিয়ে নতুন গল্পের মূল সৃষ্টি হলে তা নিয়ে একটি সিনেমা গঠিত হয়।

একে অপরের সাথে ভালোবাসার সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে ওঠে। নতুন সংসারের মাঝে দিয়ে নিজেকে ফুটিয়ে তোলে। গড়ে ওঠে নতুন সম্পর্ক নতুন জীবন।

বেদের মেয়ে জোসনা

বেদের মেয়ে জোসনা নামক একটি নাটকও হয়েছিল ভারতে। তবে দেশের মাটিতে এ নিয়ে একটি সিনেমাতে রচিত হয়েছিল তোজাম্মেল হক বাবুলের দ্বারা। এখনো বেদের মেয়ে জোসনা সকল গানগুলো যেন মানুষকে মুগ্ধ করে তুলে। আর এই সিনেমাটি একসময় প্রচুর সফলতা অর্জন করেছিল।

পরাণ মুভি ডাউনলোড লিংক / Poran Full Movie Download

চিত্রা নদীর পাড়ে

১৯৯৮ সালে বাংলাদেশের মাটিতে যে সিনেমাটি বেশি সাড়া ফেলেছিল সেটা হচ্ছে চিত্রা নদীর পাড়ে। তানভীর মোকাম্মেল সিনেমাটি পরিচালনা করেছিলেন সে সময়। আর তারপর এই সিনেমাটি জনপ্রিয় হয়ে উঠলে অনেকেই তা দেখার মতামত প্রকাশ করে। এবং জানা গেছে সে সময় প্রচুর ব্যবস্থা অর্জন করেছে সিনেমাটি। সিনেমাটিতে মূলত ১৯৪৭ সালে হিন্দুদের উপর যেরকম প্রভাব পড়েছিল তা দেখানো হয়েছে।

ধীরে বহে মেঘনা

ধীরে বহে মেঘনা সিনেমাটি ১৯৭৩ শালে বাংলাদেশের মুক্তি হয়েছে। এই সিনেমাটির পরিচালনায় ছিলেন আলমগীর কবির। সিনেমাটি মূলত মুক্তিযুদ্ধকে ঘিরে নির্মিত হয়েছে। সে সময় সিনেমাটি প্রচুর সাফল্য অর্জন করেছিল। এখনো অনেক মানুষ সিনেমাটি দেখতে চায়। আর চাইলেও আপনি ওই সিনেমাটি দেখতে পারবেন অনলাইন প্লাটফর্ম গুলোতে।

রূপালি সৈকতে

আমাদের তালিকার সর্বশেষ যে সিনেমা রয়েছে সেটি হচ্ছে রূপালী সৈকতে। আর এই সিনেমাটি বাংলাদেশে অনেক বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল মুক্তিযুদ্ধের জন্য। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার বিভিন্ন তথ্যগুলি দ্বারা বিশিষ্টভাবে সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে। এই চলচ্চিত্রটি ১৯৭৯ সালের মুক্তিপ্রাপ্ত হয় বাংলাদেশে। রুপালীর সৈকতের সিনেমার পরিচালক আলমগীর কবির।

শেষ কথা: আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি বেশ কিছু সিনেমা দেখানোর চেষ্টা করেছি। আর এই সকল সিনেমা বাংলাদেশের হওয়ার কারণে অনায়াসে দেখতে পারবেন অনলাইনে বিভিন্ন মাধ্যম গুলোতে।

Leave a Comment